
রমিজউদ্দীন একজন খেটে খাওয়া গরীব মানুষ। ঢাকা শহরে এসেছে কিছুদিন হলো। পোশাক পরিচ্ছদ নিয়ে ওইভাবে কখনো ভাবার সুযোগ হয় না। একটা ছেঁড়া গেঞ্জি আর পুরনো লুঙ্গিই সম্বল।
একবার কি মনে করে ফার্মগেট থেকে সস্তার একটা সানগ্লাস কিনে ফেলে সে।
কেনার পর পর তার মনে হতে লাগলো তাকে এই সানগ্লাসে দেখাবে বোকার হদ্দ। কারণ, গায়ে ছেঁঁড়া গেঞ্জি আর লুঙ্গি।
একটা প্যান্ট কিনলে মন্দ হয় না। এভাবে দেখা গেলো একসময় রমিজউদ্দীন প্যান্ট কিনলো, শার্ট কিনলো, জুতা কিনলো। যেগুলোর কোনোটাই আসলে তার প্রয়োজন নেই।
এভাবে একটা পার্চেইজ যখন সিরিজ অফ Unnecessary পার্চেইজ এ গিয়ে শেষ হয় তখন এটাকে ডিডেরো ইফেক্ট বলে।

The Diderot effect is the tendency to buy more things after acquiring a new item, even if those items aren’t needed. The effect can lead to a cycle of consumption and excessive materialism.

মূলত ডেনি ডিডেরো একজন ফ্রেঞ্চ ফিলোসফার, আর্ট ক্রিটিক এবং একজন লেখক। এই ভদ্রলোক বিখ্যাত এনসাইক্লোপিডিয়া লেখার কারণে। এই লোক এনসাইক্লোপিডিয়া বেচার টাকা দিয়ে একটা ড্রেসিং গাউন খরিদ করে। এই গাউনই তার কাল হলো। এরপর ফ্যান্সি ওই গাউনের সাথে পরিবেশ ম্যাচ করানোর জন্য নতুন ডেস্ক, একটা আর্ম চেয়ার, কিছু পেইন্টিংও কিনে ফেলেন। উনি ব্যাপারটা ধরতে পেরে একটা প্রবন্ধে এই বিষয়টা তুলে ধরেন। সেখান থেকেই আমরা পাই ডিডেরো ইফেক্ট!
চাতুর রামালিঙ্গম 😂 আপনাদেরকে আরো ভালো মত বুঝায় দিবে। নিচের ভিডিও দ্রষ্টব্য।👇👇
এবার আমার নিজের ব্যক্তিগত একটা গল্প বলি। For obvious reason, আমি তখন এই ব্যাপারটা জানতাম না। ইউনিভার্সিটি থাকতে ভাবতাম একটা রকিং চেয়ার নিবো। দোল খেতে খেতে বই পড়া যাবে।

চাকরিতে ঢোকার পর শখগুলো পূরণ করতে লাগলাম। তো একসময় নিজেকে আবিষ্কার করলাম রিগ্যালের শো-রুমে রকিং চেয়ার কিনতেসি। চেয়ার কেনার পর মনে হলো, একটা কুশন থাকলে হাতে জড়িয়ে ধরা যাবে। কুশন কিনলাম। বলা বাহুল্য কুশনের জন্য আবার কভার কিনতে হলো আলাদা করে। তারপর মনে হলো, যেহেতু চেয়ার স্টীলের তৈরি তাই ফ্লোর টাইলস ভেঙ্গে যেতে পারে। কেনা হলো একটা শতরঞ্জি। এরপর সৌন্দর্য-বর্ধনের জন্য ফ্লাওয়ার ভাস আর ইমিটেশান এর কিছু ফুল।
এভাবে নিজের অজান্তেই ডিডেরো ইফেক্টের শিকার হলাম।
পুরো লেখা থেকে Take home হলোঃ প্রয়োজনীয় জিনিস কেনার সময় সাবধান থাকা যাতে এর সাথে অন্য কিছু কিনে না ফেলেন যেটা অযথা অপচয়।