খুব সম্ভবত কথাটা বলসিলো আমার খুব ক্লোজ একজন বন্ধু ওমর ফারুক- হুমায়ূন আহমেদ পড়ার ব্যাপারে….. ও বলতেসিলো যে, হুমায়ূন আহমেদ পড়ার ভালো দিক হইলো- মানুষ বই পড়া শুরু করে অর্থাৎ অভ্যাস তৈরী হয় আর খারাপ দিক হইলো- অন্য কোন লেখকের বই আর পড়তে ভালো লাগে না। এই কথাটা কতখানি সত্য তা হাড়ে হাড়ে টের পাইসিলাম “আদর্শ হিন্দু হোটেল” পড়ার সময়। মজার ব্যাপার হলো-আদর্শ হিন্দু হোটেলের কথা যে বইতে পড়সিলাম ওইটার নাম “নলিনী বাবু B.Sc.” যেটা হুমায়ূন আহমেদের লেখা একটা উপন্যাস😂। নলিনী বাবু B.Sc. আমার এত ভালো লাগে যে কিছুদিন পরপর একবার রিভিশন দিই।
হোটেলে ফিরে আসি। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা ধ্রুপদী এই উপন্যাসটি প্রকাশিত হয় ১৯৪০ সালে। ব্যাগে করে নিয়ে নিয়ে কতদিন যে ঘুরসি তার ইয়ত্তা নেই। অল্প কয়েকপাতা পড়ে আর পড়া হয়নি। দীর্ঘসময় পর বইটা আবার গোড়া থেকে পড়া শুরু করি। এবার একপ্রকার নিজের সাথে যুদ্ধ করেই বইটা শেষ করি। শেষ করার পর বুঝতে পারি যে, ১৯৪০ সালে প্রকাশিত একটা বই কেন মানুষ এখনো পছন্দ করে!!

গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র হাজারী ঠাকুর একজন পাকা রাঁধুনি। রাণাঘাটের রেল-বাজারের বেচু চক্কত্তির হোটেলে রসুয়ে বামুনের চাকুরি করেন। এই আপাত নির্বিরোধী লোকটি অসম্ভব রকমের স্বপ্নবাজ একজন মানুষ যাকে বয়েস বুড়ো আঙ্গুল দেখাতে শুরু করেও খুব একটা সুবিধে করতে পারেনি। মানুষের জন্য যার অসীম ভালোবাসা আর দরদ। হোটেলের ঝি- পদ্ম’র নানান-ধরণের ফন্দি-ফিকির আর খারাপ আচরণের মাঝেও যে নিজের স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলে এক একটি মুহূর্ত।
একদিন তার নিজের একটা হোটেল হবে এই রাণাঘাটেই-যেটা হবে একটা আদর্শ হোটেল। যে হোটেল খরিদ্দারদের ঠকায় না, পচা-বাসি খাবার খাওয়ায় না, ছল-চাতুরি করে না।
হাজারি ঠাকুর জীবনের পরতে পরতে জড়িয়ে থাকা নানান ঘাত-প্রতিঘাত সহ্য করে এগিয়ে চলে। তার স্বপ্ন কি পূরণ হবে? জানতে হলে পড়তে হবে উপন্যাসটি।
এতটুকু মাত্র লেখাতে এই কালজয়ী উপন্যাসের প্রতি খুব একটা সুবিচার করা হলো না। এই দায়টুকু নিতান্তই আমার লেখনীর দূর্বলতার। আশা করি পাঠকরা ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতেই দেখবেন ব্যাপারটাকে। নিচে বইটি সংগ্রহ করার লিংকযুক্ত করা হলোঃ 👇👇