লেখাঃ শেখ মহিউদ্দীন ইউসুফ মিরাজ
(শিক্ষার্থী)
সাব্বির জাদিদ ভাইয়ার এই নিয়ে দ্বিতীয় বই পড়ছি। আগে পড়েছিলাম “বাংলাদেশ এন্টারপ্রাইজ”। দুটো বই-ই গল্প-গ্রন্থের।
এতো ঘোর লাগা লেখা আমি খুব কমই পড়েছি। বইয়ের শুরুটাই প্রচ্ছদ নামের শিরোনামের গল্প দিয়ে। মোট দশটি গল্প দিয়ে সাজানো বইটি পাঠকের মনে গভীর রেখাপাত করবে বললে মোটেও বাড়িয়ে বলা হবে না।

একজন মানুষের মৃত্যুর খাটিয়াতে যাওয়ার পূর্বেই তার সারাজীবনের কৃতকর্মের ফর্দ তুলে ধরা হয়েছে। মানুষ বুঝি মরে গেলে ভালো-মন্দের পার্থক্যটা বেশ ভালো ভাবেই বুঝতে পারে কিন্তু করার মধ্যে অবশিষ্ট যা থাকে তাহলো আফসোস, আক্ষেপ।
দ্বিতীয় গল্পটা হলো কুরবানির গোশত বিতরণ নিয়ে। আমাদের সমাজে একটা জঘন্য বিষয়ের প্রচলন আছে তাহলো গোশত বিতরণের সময় মিসকিনের ভাগ থেকেও নিজেরা গোশত রেখে দেয়া। আর যারা এই গোশতের হকদার তাদের সাথে চারপায়ী পশুর চেয়েও খারাপ আচরণ করা।
বইটি ২০১৭ সালে প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু লেখার টান আর শব্দচয়ন মনে হয় এতোটাই প্রাণবন্ত যে এই বুঝি গরম গরম লেখকের থলে থেকে শব্দগুলো বের হচ্ছে।
আগ্রহী পাঠকদের জন্য সূচিপত্র রইলোঃ
একটি শোক সংবাদ
কুত্তা
সূর্য না-ওঠা জনপদের গল্প
একটি পুঁজিবাদী গল্প
যখন এসেছিলে
দূরত্ব
দোলায়িত জীবনের গান
যতিচিহ্ন
জাতক ও জন্মভূমি
পড়শি
রকমারীর লিংকে ঢুঁ মেরে বইয়ের শুরুর কিছু অংশ পড়ে নিতে পারেন।
বইটির ফ্ল্যাপ এর লেখাঃ
প্রযুক্তির ক্রমান্বয় উন্নতির ফলে সময় এখন যেন দৌড়ায়। আমরা এখন নিঃশ্বাস নিই ছােট করে। শামুকের খােলসের ভেতরে বসে তাকিয়ে দেখি বিশ্ব। সম্পর্কে চির ধরেছে। বিশ্ব এখন একটি গ্রাম কিন্তু আত্মযােগাযােগের বিচ্ছিন্নতা বেড়েছে। এমনি সময়ে, মানব সভ্যতার উন্নতির স্বর্ণযুগে বসে তৃতীয় বিশ্বের বাসিন্দা আমরা। মধ্যবিত্ত, নিম্নবিত্তের সংজ্ঞার কার্যকারিতা হারিয়েছে। সমুখে দর্পণের যুগে আমরা নিজেদের নগ্ন দেখে দৌড়াই, আরো নগ্ন হই। এমনি আমাদের ক্যাপিটালিস্ট সমাজের পরিবর্তমান সময় এক। যেখানে পরিবর্তনের ধারা ধোঁয়াশাচ্ছন্ন, বড় গােলমেলে। চতুর্দিকে জটিলতা বেড়েছে বহুগুণ। এমনি এক অস্বস্তিকর সময় ও সমাজ আপন আলােয় ছেঁকে নিয়ে গল্প লেখেন তরুণ এ-কথাশিল্পী। তার গল্পের আখ্যান বর্ণনার বিভিন্নতা, গদ্যশৈলীর নিরুপদ্রব প্রকরণ সহজেই পাঠককে মনােযােগী করে তােলে। বিচিত্র বিষয় নিয়ে তার লেখার পরিধিও বিস্তৃত। মনােজগতের অভিজ্ঞান, ব্যক্তিক মন-বেদনা, আজ-কাল-পরশুর নানাবিধ চঞ্চলতা তার আখ্যান বর্ণনার ধারা নতুন মাত্রার দাবিদার। আঙ্গিক প্রকরণ নিয়ে নিরীক্ষা প্রবণতা এ কথাশিল্পীর বড় বৈশিষ্ট্য। এভাবে দেশ-কাল-মানুষের সমস্তকে নিয়ে তিনি তৈরি করে চলেছেন এইসব জীবন ও যাপনের আখ্যান।
লেখক পরিচিতিঃ
সাব্বির জাদিদের জন্ম কুষ্টিয়ায়। প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনের পর মায়ের ইচ্ছায় ভর্তি হন মাদরাসায়। পড়েছেন হিফজ বিভাগে। দাওরার পাশাপাশি কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্পন্ন করেছেন অনার্স মাস্টার্স। কৈশোর থেকেই লেখালেখির নেশা। লেখেন প্রধানত গল্প-উপন্যাস। বর্তমানে ঢাকার একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত আছেন।
বইটি নিজের জন্য কিংবা উপহার দেয়ার জন্য সংগ্রহ করতে চাইলে নিচে দেওয়া লিংকে প্রবেশ করুন। রকমারী ওয়েবসাইট লিংক।